দিনাজপুর থেকে সিদ্দিক হোসেন : দিনাজপুর হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (হাবিপ্রবি)তে যৌন নির্যাতনকারী ও গৃহকর্মীর সাথে অবৈধ সম্পর্ক স্থাপনকারী বায়োকেমিষ্ট্রি এন্ড মলিকুলার বায়োলজি বিভাগের শিক্ষক রমজান আলীকে বহিস্কার না করায় দিনাজপুরকে কলঙ্কমুক্ত করতে প্রয়োজনে দিনাজপুরবাসীকে নিয়ে ইয়াসমিন হত্যা আন্দোলনের মতো আন্দোলনে যাওয়া ঘোষনা দিয়েছে মহিলা পরিষদ। শনিবার দিনাজপুর প্রেস ক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে এই ঘোষণা দেয়া হয়। কর্মসূচীতে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য, প্রধানমন্ত্রী, শিক্ষামন্ত্রী বরাবরে স্মারকলিপি প্রদান, মানববন্ধন, অনশনসহ অবস্থান ধর্মঘট ও বিক্ষোভ সমাবেশ করার ঘোষণা দেয়া হয়েছে। এতেও অভিযুক্ত শিক্ষককে স্থায়ীভাবে বহিস্কার ও বিচারে আওয়তায় না আনা হলে জেলার সব শ্রেনীপেশার মানুষকে নিয়ে দিনাজপুরে অবরোধ কর্মসূচী সহ বিভিন্ন আন্দোলন করার হুশিয়ারী দিয়েছে দিনাজপুর মহিলা পরিষদ। সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, গত ২০১৭ সালের ১৮ জুলাই বিশ্ববিদ্যালয়ের বায়োকেমিষ্ট্রি এন্ড মলিকুলার বায়োলজি বিভাগের সহকারি অধ্যাপক রমজান আলীর বিরূদ্ধে যৌন সর্ম্পক চেষ্টার জন্য চাপ দেওয়ার অভিযোগ এনে এক ছাত্রী লিখিত অভিযোগ ও প্রয়োজনীয় প্রমানাদী জমা দেন। পরে তার স্ত্রীও বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে যৌতুকের জন্য নির্যাতন ও ছাত্রীর সাথে অনৈতিক সম্পর্কের অভিযোগ দেন। এরই পরিপ্রেক্ষিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের গঠিত তদন্ত কমিটি ছাত্রীকে যৌন নির্যাতন ও গৃহকর্মীর সাথে অনৈতিক সম্পর্কের সত্যতা পায়। পরে হাইকোর্টের নির্দেশনা অনুযায়ী বিশ্ববিদ্যালয়ের যৌন নির্যাতন অভিযোগ গ্রহণকারী কমিটিও অনুরূপ সত্যতা পায় এবং ওই শিক্ষককে চাকুরী থেকে বহিস্কার এবং শাস্তির বিধান নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত সাময়িক বহিস্কারের সুপারিশ করে। কিন্তু ওই শিক্ষকের ব্যাপারে কোন পদক্ষেপ গ্রহণ করেনি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। পরে শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও মহিলা পরিষদের আন্দোলনের প্রেক্ষিতে গত বছরের ৩০ জুলাই শিক্ষক রমজান আলীকে সাময়িক বহিস্কার করে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। এরপরে রিজেন্ট বোর্ডে তাকে স্থায়ীভাবে বহিস্কার করার আশ্বাস দিলেও গত ৩টি রিজেন্ট বোর্ডে সেই সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়নি। যাতে করে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা অনিরাপদ ও একের পর এক ঘটনার পুনরাবৃত্তি হচ্ছে। সেই সাথে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের এমন টালবাহানা রাষ্ট্রপতি এবং হাইকোর্টের নির্দেশনার সাথে উপহাসের সামিল। এতকিছু প্রমাণাদি থাকার পরও হাবিপ্রবি বর্তমান প্রশাসন যৌন নির্যাতনকারী শিক্ষকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ না করায় দিনাজপুর মহিলা পরিষদ সকল শ্রেণি পেশার মানুষকে এই আন্দোলন সামিল হওয়ার আহবান জানিয়ে বলেছন, ইয়াসমিন আন্দোলনের পূণ্যভূমি দিনাজপুর এমন শিক্ষকের ঠাই হবে না বলে হুশিয়ারী দেয়া হয় সংবাদ সম্মেলনে। এ সময় মহিলা পরিষদের সভাপতি কানিজ রহমান, সাধারন সম্পাদক ড. মারুফা বেগম, সহ-সভাপতি অর্চনা অধিকারী, মাহবুবা খাতুন, সাংগঠনিক সম্পাদক রুবিনা আকতার, প্রশিক্ষন ও গবেষনা সম্পাদক রুবি আফরোজ, সামাজিক অনাচার প্রতিরোধ কমিটির আহ্বায়ক সফিকুল ইসলাম প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।