রংপুরের পীরগাছায় বৈদ্যুতিক সট সার্কিটের আগুনে পুড়ে ছাই হয়ে গেলো বিধাব মনোয়ারা বেগম ও তার দুই সন্তানের সাজানো সংসার। মাত্র ৪০ মিনিটে পুড়ে মাটিতে মিশে গেছে তিলতিল করে গড়ে তোলা মনোয়ারা বেগমের ৪০ বছরের ইতিহাস। পড়নের কাপড় ছাড়া কিছুই রক্ষা করতে পারেননি পরিবারটি। গত মঙ্গলবার রাত ৮ টার দিকে উপজেলার কৈকুড়ী ইউনিয়নের কুটিপাড়া গ্রামে ৬টি ঘর ও ৭ লক্ষাধিক টাকার আসবাবপত্র পড়ে যাওয়ার এ ঘটনা ঘটে।
স্থানীয় বাসিন্দা আতোয়ার হোসেন জানান, ওই গ্রামের মৃত হাতেম আলী শেখের স্ত্রী মনোয়ারা বেগম (৫৭) ও তার দুই ছেলে মনজু মিয়া এবং আব্দুর রহমানকে নিয়ে স্বামীর রেখে যাওয়া জমিতে সুখেই বসবাস করে আসছিলেন। বড় ছেলে মনজু মিয়া দিনমজুরী করলেও সংসারে অভাব ছিল না। মঙ্গলবার রাত ৮ টার দিকে বিদ্যুতের সট সার্কিট থেকে অগ্নিকান্ডের সুত্রপাত হলে মুহুর্তে তা চারদিকে ছড়িয়ে পড়ে। এতে বিধবা মনোয়ারা বেগমের একটি, ছেলে মনজু মিয়ার ৩টি, আব্দুর রহমানের একটি ও প্রতিবেশি শমসের আলীর একটি ঘর পুড়ে ছাই হয়ে যায়। এসময় ঘরে থাকা এক লক্ষ টাকা, স্বর্ণ, আসবাবপত্র কিছুই বের করা যায়নি। স্থানীয় ফায়ার সার্ভিসকে খবর দেয়া হলেও রাস্তা সরু থাকায় ঢুকতে পারেননি গাড়ি। নিভানোর মত পানি ছিল না কোন পুকুরে। ফলে মাত্র ৪০ মিনিটেই সবকিছু পুড়ে যায়। এতে প্রায় ৭ লক্ষাধিক টাকা ক্ষতি হয়েছে বলে জানান মনজু মিয়া।
নিউজ বিজয়ের সর্বশেষ খবর পেতে Google News অনুসরণ করুন।
গতকাল বুধবার সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, পুড়ে যাওয়া কালো ছাইয়ে নিজের গহনা খুজঁছেন বিধবা মনোয়ারা বেগমের ছেলে বউ রতনা বেগম ও কয়েকজন গ্রামবাসী। চারদিকে পোড়া গন্ধ। নিজেদের পড়নের কাপড় ছাড়া কিছুই নেই। প্রতিবেশিরা সকালে খাবার দিয়েছে।
বিধবা মনোয়ারা বেগম বলেন, টাকা-পাইসা সব ছাই হয়া গেলো। ৪০ মিনিটে আমি ও আমার ছেলেরা পথের ফকির হয়া গেনো। কিছুই থাকিলো না।
এদিকে স্থানীয় কৈকুড়ী ইউপি চেয়ারম্যান নুর আলম মিয়া ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে সাহায্যের আশ^াস দিয়েছেন। এছাড়াও বিকেলে হামার পীরগাছা নামে একটি ফেসবুক গ্রুপের সদস্যরা শুকনা খাবার, কম্বল, শাড়ী, লঙ্গিসহ আনুষাঙ্গিক কিছু সাহায্যে ওই বাড়িতে পৌছে দিয়েছে।
পীরগাছা ফায়ার সর্ভিসের ইনচার্জ আব্দুল মান্নান বলেন, ওই বাড়িতে যাতায়াতের রাস্তা সরু থাকায় আমাদেও গাড়ি ঢুকতে পারেনি। ভ্যানে করে মালামাল নেয়া হলেও কোন পুকুরে পানি না থাকায় আমাদের করণীয় কিছু ছিল না। তবে পরিবারটির অসহায়ত্ব আমাদের পীড়া দিয়েছে।