
সম্প্রতি দেশে নিপাহ ভাইরাসের আতঙ্ক ছড়িয়েছে। ইতোমধ্যে বেশ কয়েকজন মারা গেছেন এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে। যদিও স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক জানিয়েছেন নিপাহ ভাইরাস নিয়ন্ত্রণে আছে। একইসঙ্গে এই রোগের চিকিৎসায় বক্ষব্যাধি হাসপাতালে একটা ইউনিট করা হয়েছে বলেও জানানো হয়েছে।
সোমবার দুপুরে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের কক্ষে নিপা ভাইরাস পরিস্থিতিসহ স্বাস্থ্যসেবা সংক্রান্ত বিভিন্ন বিষয়ে ব্রিফিংয়ে এ তথ্য জানান তিনি।
নিউজ বিজয়ের সর্বশেষ খবর পেতে Google News অনুসরণ করুন।
নারীদের জরায়ু মুখ ক্যান্সার প্রতিরোধ প্রসঙ্গে জাহিদ মালেক বলেন, আগামী সেপ্টেম্বরে দেশের ১০-১৫ বছর বয়সী কিশোরীকে জরায়ু মুখ ক্যান্সারের ভ্যাকসিন দেয়া হবে। ফলে আজীবন জরায়ু মুখ ক্যান্সার থেকে মুক্ত থাকা সম্ভব হবে।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ইউনিভার্সেল হেলথ কাভারেজের আওতায় প্রাথমিক পর্যায়ে দেশের ছয়টি জেলার মোট ১৫ লাখ পরিবারকে ৫০ হাজার টাকা সমমূল্যের স্বাস্থ্যসেবা দেয়া হবে। ছয়টি জেলা হলো- বরিশাল, বরগুনা, লক্ষ্মীপুর, কুড়িগ্রাম, মানিকগঞ্জ ও ঢাকা।
ইতিমধ্যে নিপা ভাইরাসে আক্রান্ত ১০ জনকে শনাক্ত করেছে সরকারের স্বাস্থ্য বিভাগ। এর মধ্যে মারা গেছেন সাতজন। মৃত্যুর হার ৭০ শতাংশ। এ ছাড়া নিয়মিতভাবে সন্দেহজনক রোগীর তথ্য পাচ্ছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।
নিপাহ ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব দেখা দেয়ার পরিপ্রেক্ষিতে দেশের ৩২টি বা ৫০ শতাংশ জেলাকে ঝুঁকিপূর্ণ মনে করছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। ২ ফেব্রুয়ারি জেলাগুলোতে পাঠানো জরুরি বিজ্ঞপ্তিতে হাসপাতালে রোগী দেখার সময় চিকিৎসকদের মাস্ক পরাসহ সতর্কতা অবলম্বন করার কথা বলেছে অধিদপ্তর।
বাংলাদেশে প্রথম নিপাহ ভাইরাসে আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয় ২০০১ সালে দেশের দক্ষিণ–পশ্চিমাঞ্চলের মেহেরপুর জেলায়। এরপর ২০০২, ২০০৬ ও ২০১৬ সাল ছাড়া প্রতিবছরই নিপাহ ভাইরাসে আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয়েছে কোনো না কোনো জেলায়। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি শনাক্ত হয় ২০০৪ সালে। ওই বছর ৬৭ জন নিপাহ ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছিলেন।
বিজ্ঞানী ও গবেষকেরা বলছেন, নিপাহ ভাইরাসে আক্রান্ত ব্যক্তিদের মৃত্যুহার অনেক বেশি। ৭০ শতাংশের ওপরে। বাংলাদেশে এ পর্যন্ত নিপাহ ভাইরাসে আক্রান্ত ৩৩৫ জনকে শনাক্ত করেছে আইইডিসিআর। এর মধ্যে মারা গেছেন ২৩৭ জন, অর্থাৎ মৃত্যুর হার ৭১ শতাংশ।