ঢাকা ০৯:৪১ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
ফলো-আপ নিউজ 

উলিপুরে অবৈধ বালু উত্তোলনকারীর বিরুদ্ধে মামলা!ক্ষতিগ্রস্থ মানুষের মাঝে স্বস্তি 

কুড়িগ্রামের উলিপুরে ব্রহ্মপুত্র নদ থেকে অবৈধ ভাবে বালু উত্তোলন ও বিক্রির অপরাধে অবশেষে ৩ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতনামা ৫/৬ জনের বিরুদ্ধে থানায় মামলা দায়ের করেছে ইউনিয়ন ভূমি উপ-সহকারী কর্মকর্তা । মামলা দায়েরের খবরে এলাকার ক্ষতিগ্রস্ত মানুষজনের মাঝে স্বস্তি ফিরে আসে। উলিপুর থানার অফিসার ইনচার্জ শেখ আশরাফুজ্জামান মামলা দায়েরের বিষয়টি নিশ্চিত করেন।

গত মঙ্গলবার মধ্যরাতে অবৈধ বালু মহালে অভিযান চালান সহকারি কমিশনার (ভূমি) উলিপুর কাজী মাহমুদুর রহমান। তিনি গোপন সংবাদের ভিত্তিতে একদল পুলিশ নিয়ে ঘটনা স্থলে গিয়ে বালু পরিবহনের কাজে ব্যবহৃত দুটি ট্রাক ও সিন্ডিকেট বাহিনীর সদস্যদের ব্যবহৃত দুটি মোটরসাইকেল আটক করেন। তবে এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত সংশ্লিষ্ট অপরাধীদের কাউকে পুলিশ গ্রেফতার করতে পারেনি।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, হাতিয়া ইউনিয়ন ভূমি উপ-সহকারী কর্মকর্তা মোঃ পারভেজ নুর আলম ২০১০ সালের বালু মহাল ও মাটি ব্যবস্থাপনা আইনের ১৫(১) ধারায় অপরাধীদের বিরুদ্ধে উলিপুর থানায় মামলা দায়ের করেন। আসামীরা হচ্ছে, মাইদুল ইসলাম, জিয়া মিয়া ও বাবু মিয়া। সকলের বাড়ি হাতিয়ে ইউনিয়নের হাতিয়া ভবেশ গ্রামে।

জানাগেছে, কুড়িগ্রাম জেলার উলিপুর উপজেলার হাতিয়া ইউনিয়নের হাতিয়ার গ্রাম এলাকায় ব্রহ্মপুত্র নদের তীরে মাইদুল ইসলাম, জিয়া ও বাবুসহ ৫-৬ জনের একটি সিন্ডিকেট বাহিনী দীর্ঘদিন ধরে সেখানে একটি অবৈধ বালু মহাল গড়ে তোলে অবৈধ বালুর ব্যবসা চালিয়ে আসছিল।

অভিযোগ রয়েছে, সিন্ডিকেট বাহিনীর ব্রহ্মপুত্র নদ থেকে যত্রতত্র বালু উত্তোলন ও নদীতে বেপরোয়া তৎপরতার কারণে এলাকাটির নদী তীরবর্তী বেশ কিছু ঘরবাড়ি, ফসলি জমিসহ ব্রহ্মপুত্রের তীর রক্ষা প্রকল্প হুমকির মুখে পড়ে। অপরিকল্পিতভাবে ড্রেজার বসিয়ে বালু উত্তোলনের ঘটনায় এলাকার মানুষের মাঝে অসন্তোষ ধীরে ধীরে তীব্র আকার ধারণ করে। স্থানীয় লোকজন বিষয়টি উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও সহকারী কমিশনার (ভূমি) কে অবহিত করে প্রতিকার দাবি করেন। এরপরই অভিযানে নামেন সহকারী কমিশনার (ভূমি) উলিপুর।

অনুসন্ধানে জানা যায়, সিন্ডিকেট সদস্যরা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নিয়োজিত ঠিকাদার গুনবাবুর চলমান তীর রক্ষা কাজকে ঢাল হিসেবে ব্যবহার করে, প্রতিদিন ৫০ থেকে ৬০ ট্রাক বালু জেলা ও জেলার বাইরে নির্বিঘ্নে বিক্রি করেন।

অবৈধ বালু ব্যবসায়ী সিন্ডিকেট সদস্যরা প্রচার করত এ-সব বালু সদর উপজেলার মোগল বাসা এলাকার পাউবো’র অন্য একটি তীর রক্ষা কাজে ব্যবহার করা হচ্ছে। শুধু তাই নয় তাদের কতিপয় ট্রাক চালক “পানি উন্নয়ন বোর্ডের বালু পরিবহনে ব্যবহৃত ট্রাক্টর” কম্পিউটারে লেখা স্টিকার ব্যবহার করে বালু পাচার করছিল ।

এলাকায় জনশ্রুতি রয়েছে, এ সব অবৈধ কর্মকান্ডে নেপথ্যে সহযোগিতা করছে পানি উন্নয়ন বোর্ডের মাঠ পর্যায়ে নিয়োজিত জনৈক্য প্রকৌশলী ও কতিপয় কর্মচারী। ঘাটের স্থানীয় দোকানদার, আশপাশের লোকজন এবং পাথর ভাঙ্গা শ্রমিকরাও সিন্ডিকেট বাহিনীর সদস্যদের শেখানো বুলি অনুযায়ী যে কেউ জিজ্ঞেস করলেই বলে দিত এসব বালু পানি উন্নয়ন বোর্ডের অন্য একটি সাইডে যাচ্ছে।

এদিকে, অবৈধ বালু দিবারাত্রি ট্রাকযোগে পরিবহনের কারণে স্থানীয় পাকা রাস্তা গুলো ব্যবহার অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। ফলে গ্রামীন এসব পাকা সড়ক দিয়ে অটোসহ যান চলাচল ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে। প্রতিনিয়ত ছোট ছোট যানবাহন দুর্ঘটনার শিকার হচ্ছে।

এ ব্যাপারে উলিপুর থানার অফিসার ইনচার্জ শেখ আশরাফুজ্জামানের সাথে যোগাযোগ করা হলে,তিনি মামলা দায়েরের কথা স্বীকার করে বলেন, দ্রুত আসামীদের গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনা হবে।

সহকারী কমিশনার ( ভূমি) উলিপুর কাজী মাহমুদুর রহমানের সাথে কথা হলে তিনি বলেন , অপরাধীদের বিরুদ্ধে নিয়মিত মামলা দায়ের করা হয়েছে। অপরাধী যেই হোক আইন তার নিজস্ব গতিতে চলবে এবং যেকোনো মূল্যে অবৈধ কার্যক্রম বন্ধ করা হবে।

নিউজবিজয়২৪/এফএইচএন

👉 নিউজবিজয় ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন ✅

আপনার সোস্যাল মিডিয়ায় শেয়ার দিন।

NewsBijoy24.Com

নিউজবিজয়২৪.কম একটি অনলাইন নিউজ পোর্টাল। বস্তুনিষ্ঠ ও তথ্যভিত্তিক সংবাদ প্রকাশের প্রতিশ্রুতি নিয়ে ২০১৫ সালের ডিসেম্বর মাসে এটি প্রতিষ্ঠিত হয়। উৎসর্গ করলাম আমার বাবার নামে, যাঁর স্নেহ-সান্নিধ্যের পরশ পরিবারের সুখ-দু:খ,হাসি-কান্না,ব্যথা-বেদনার মাঝেও আপার শান্তিতে পরিবার তথা সমাজে মাথা উচুঁ করে নিজের অস্তিত্বকে মেলে ধরতে পেরেছি।

নামাজের সময়সূচি: ২৭ এপ্রিল ২০২৪

ফলো-আপ নিউজ 

উলিপুরে অবৈধ বালু উত্তোলনকারীর বিরুদ্ধে মামলা!ক্ষতিগ্রস্থ মানুষের মাঝে স্বস্তি 

প্রকাশিত সময় :- ১১:৩৫:৫৬ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৫ নভেম্বর ২০২২

কুড়িগ্রামের উলিপুরে ব্রহ্মপুত্র নদ থেকে অবৈধ ভাবে বালু উত্তোলন ও বিক্রির অপরাধে অবশেষে ৩ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতনামা ৫/৬ জনের বিরুদ্ধে থানায় মামলা দায়ের করেছে ইউনিয়ন ভূমি উপ-সহকারী কর্মকর্তা । মামলা দায়েরের খবরে এলাকার ক্ষতিগ্রস্ত মানুষজনের মাঝে স্বস্তি ফিরে আসে। উলিপুর থানার অফিসার ইনচার্জ শেখ আশরাফুজ্জামান মামলা দায়েরের বিষয়টি নিশ্চিত করেন।

গত মঙ্গলবার মধ্যরাতে অবৈধ বালু মহালে অভিযান চালান সহকারি কমিশনার (ভূমি) উলিপুর কাজী মাহমুদুর রহমান। তিনি গোপন সংবাদের ভিত্তিতে একদল পুলিশ নিয়ে ঘটনা স্থলে গিয়ে বালু পরিবহনের কাজে ব্যবহৃত দুটি ট্রাক ও সিন্ডিকেট বাহিনীর সদস্যদের ব্যবহৃত দুটি মোটরসাইকেল আটক করেন। তবে এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত সংশ্লিষ্ট অপরাধীদের কাউকে পুলিশ গ্রেফতার করতে পারেনি।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, হাতিয়া ইউনিয়ন ভূমি উপ-সহকারী কর্মকর্তা মোঃ পারভেজ নুর আলম ২০১০ সালের বালু মহাল ও মাটি ব্যবস্থাপনা আইনের ১৫(১) ধারায় অপরাধীদের বিরুদ্ধে উলিপুর থানায় মামলা দায়ের করেন। আসামীরা হচ্ছে, মাইদুল ইসলাম, জিয়া মিয়া ও বাবু মিয়া। সকলের বাড়ি হাতিয়ে ইউনিয়নের হাতিয়া ভবেশ গ্রামে।

জানাগেছে, কুড়িগ্রাম জেলার উলিপুর উপজেলার হাতিয়া ইউনিয়নের হাতিয়ার গ্রাম এলাকায় ব্রহ্মপুত্র নদের তীরে মাইদুল ইসলাম, জিয়া ও বাবুসহ ৫-৬ জনের একটি সিন্ডিকেট বাহিনী দীর্ঘদিন ধরে সেখানে একটি অবৈধ বালু মহাল গড়ে তোলে অবৈধ বালুর ব্যবসা চালিয়ে আসছিল।

অভিযোগ রয়েছে, সিন্ডিকেট বাহিনীর ব্রহ্মপুত্র নদ থেকে যত্রতত্র বালু উত্তোলন ও নদীতে বেপরোয়া তৎপরতার কারণে এলাকাটির নদী তীরবর্তী বেশ কিছু ঘরবাড়ি, ফসলি জমিসহ ব্রহ্মপুত্রের তীর রক্ষা প্রকল্প হুমকির মুখে পড়ে। অপরিকল্পিতভাবে ড্রেজার বসিয়ে বালু উত্তোলনের ঘটনায় এলাকার মানুষের মাঝে অসন্তোষ ধীরে ধীরে তীব্র আকার ধারণ করে। স্থানীয় লোকজন বিষয়টি উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও সহকারী কমিশনার (ভূমি) কে অবহিত করে প্রতিকার দাবি করেন। এরপরই অভিযানে নামেন সহকারী কমিশনার (ভূমি) উলিপুর।

অনুসন্ধানে জানা যায়, সিন্ডিকেট সদস্যরা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নিয়োজিত ঠিকাদার গুনবাবুর চলমান তীর রক্ষা কাজকে ঢাল হিসেবে ব্যবহার করে, প্রতিদিন ৫০ থেকে ৬০ ট্রাক বালু জেলা ও জেলার বাইরে নির্বিঘ্নে বিক্রি করেন।

অবৈধ বালু ব্যবসায়ী সিন্ডিকেট সদস্যরা প্রচার করত এ-সব বালু সদর উপজেলার মোগল বাসা এলাকার পাউবো’র অন্য একটি তীর রক্ষা কাজে ব্যবহার করা হচ্ছে। শুধু তাই নয় তাদের কতিপয় ট্রাক চালক “পানি উন্নয়ন বোর্ডের বালু পরিবহনে ব্যবহৃত ট্রাক্টর” কম্পিউটারে লেখা স্টিকার ব্যবহার করে বালু পাচার করছিল ।

এলাকায় জনশ্রুতি রয়েছে, এ সব অবৈধ কর্মকান্ডে নেপথ্যে সহযোগিতা করছে পানি উন্নয়ন বোর্ডের মাঠ পর্যায়ে নিয়োজিত জনৈক্য প্রকৌশলী ও কতিপয় কর্মচারী। ঘাটের স্থানীয় দোকানদার, আশপাশের লোকজন এবং পাথর ভাঙ্গা শ্রমিকরাও সিন্ডিকেট বাহিনীর সদস্যদের শেখানো বুলি অনুযায়ী যে কেউ জিজ্ঞেস করলেই বলে দিত এসব বালু পানি উন্নয়ন বোর্ডের অন্য একটি সাইডে যাচ্ছে।

এদিকে, অবৈধ বালু দিবারাত্রি ট্রাকযোগে পরিবহনের কারণে স্থানীয় পাকা রাস্তা গুলো ব্যবহার অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। ফলে গ্রামীন এসব পাকা সড়ক দিয়ে অটোসহ যান চলাচল ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে। প্রতিনিয়ত ছোট ছোট যানবাহন দুর্ঘটনার শিকার হচ্ছে।

এ ব্যাপারে উলিপুর থানার অফিসার ইনচার্জ শেখ আশরাফুজ্জামানের সাথে যোগাযোগ করা হলে,তিনি মামলা দায়েরের কথা স্বীকার করে বলেন, দ্রুত আসামীদের গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনা হবে।

সহকারী কমিশনার ( ভূমি) উলিপুর কাজী মাহমুদুর রহমানের সাথে কথা হলে তিনি বলেন , অপরাধীদের বিরুদ্ধে নিয়মিত মামলা দায়ের করা হয়েছে। অপরাধী যেই হোক আইন তার নিজস্ব গতিতে চলবে এবং যেকোনো মূল্যে অবৈধ কার্যক্রম বন্ধ করা হবে।

নিউজবিজয়২৪/এফএইচএন