ঢাকা ০৭:৫২ অপরাহ্ন, বুধবার, ০৩ জুলাই ২০২৪, ১৯ আষাঢ় ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

কখনো ভাবিনি দেশ সেরা হবো! জাতীয় পর্যায়ে শ্রেষ্ঠ প্রধান শিক্ষিকা পদক পেলেন পীরগাছার রেহেনা

প্রাথমিক শিক্ষাকে বাদ দিয়ে স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ে তোলা সম্ভব নয়, আমরা যদি প্রাথমিক স্থর টা মজবুত ও টেকসই হিসেবে গড়ে তুলতে পারি, তাহলে সুন্দর দেশ ও জাতী গঠনে প্রাথমিক শিক্ষা আরো একধাপ এগিয়ে যাবে। আমি কখনো ভাবিনি দেশ সেরা হবো, আমার এ পদক প্রাপ্তিতে আমাকে অনুপ্রাণিত করেছে। প্রাথমিক শিক্ষায় নানাবিধ উদ্যোগ গ্রহনের মাধ্যমে প্রাথমিক শিক্ষার মানোন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা পালন করায় আজ আমার এই অর্জন।
এই কথাগুলো বলছিলেন জাতীয় পর্যায়ে শ্রেষ্ঠ প্রধান শিক্ষিকা নির্বাচিত হয়ে প্রধানমন্ত্রীর হাত থেকে পদক গ্রহন করা প্রধান শিক্ষিকা মোছা. রেহেনা বেগম। বৃহস্পতিবার (২৭ জুন) ঢাকার ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে জাতীয় প্রাথমিক শিক্ষা পদক ২০২৩ প্রদান অনুষ্ঠানে তার হাতে পদক তুলে দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। প্রাথমিক শিক্ষা পদক-২০২৩ এর শ্রেষ্ঠ প্রধান শিক্ষক (সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়) ক্যাটাগরিতে নির্বাচিত তিনি।
মোছা. রেহেনা বেগম রংপুরের পীরগাছা উপজেলার পবিত্রঝাড় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা হিসেবে কর্মরত। এর আগে তিনি উপজেলা ও বিভাগীয় পর্যায়ে শ্রেষ্ঠ প্রধান শিক্ষিকা নির্বাচিত হন। তার এ সাফল্যে পীরগাছা উপজেলার শিক্ষক সমাজে প্রশংসিত।
জাতীয় প্রাথমিক শিক্ষা পদক ২০২৩ প্রদান অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব ফরিদ আহাম্মদ। এতে বিশেষ অতিথি হিসেবে ছিলেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী রুমানা আলী টুসি। এ দিন প্রাথমিক শিক্ষার ক্ষেত্রে অসামান্য অবদান, খেলাধুলা, সংগীত, বিদ্যালয় পরিচালনা, প্রাথমিক সমাপনী পরীক্ষায় কৃতিত্ব অর্জনকারী প্রতিষ্ঠান, ব্যক্তি ও শিক্ষার্থী ১২৬ জনের হাতে বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে পদক তুলে দেওয়া হয়।
প্রধান শিক্ষিকা মোছা. রেহেনা বেগম ১৯৮০ সালে রংপুরের পীরগাছা উপজেলার সুখানপুকুর গ্রামের সম্ভ্রান্ত এক মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতা আজাহার আলী পেশায় একজন ব্যবসায়ী। চার ভাইবোনের মধ্যে রেহেনা বেগম সবার ছোট। তিনি ২০০৬ সালে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় হতে উদ্ভিদ বিজ্ঞানে মাস্টার্স সম্পন্ন করেন। ২০০৭ সালে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক হিসেবে চাকুরীতে যোগ দেন। ব্যক্তিগত জীবনে তার স্বামী ও নয় বছরের এক ছেলে সন্তান রয়েছে।
প্রধান শিক্ষিকা মোছা. রেহেনা বেগম বলেন, আমার সফলতার বীজ নগরজিৎপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। একটি পিছিয়ে পড়া বিদ্যালয়টি প্রাথমিক শিক্ষা পদক ২০২২ উপজেলার শ্রেষ্ঠ বিদ্যালয় হিসেবে নির্বাচিত হয় এবং প্রাথমিক বৃত্তি পরীক্ষায় ৬ শিক্ষার্থী অংশগ্রহণ করে ৪ জনই ট্যালেন্টপুল বৃত্তি লাভ করে উপজেলা শ্রেষ্ঠ রেজাল্ট অর্জন করে। আমি শিক্ষার্থীদের লেখা পড়ার পাশাপাশি কো-কারিকুলামের উপর গুরুত্ব আরোপ করি, যা তাদের সার্বিক বিকাশে মাইলস্টোন হিসেবে কাজ করে। আমি স্কুলের বাচ্চাদের নিজের সন্তানের মত মনে করি। স্কুলের বাচ্চাদের ঝরে পড়া রোধ, পড়াশোনায় মনোযোগী করা, সৃজনশীল কর্মকান্ডে উদ্বুদ্ধকরণ, নৈতিক মূল্যবোধের শিক্ষাসহ নানাবিধ কর্মকান্ডে আমি নিজেকে নিবিড়ভাবে সম্পৃক্ত করেছিলাম। যার স্বীকৃতি স্বরুপ আমি জাতীয় পর্যায়ে শ্রেষ্ঠ প্রধান শিক্ষিকার পদক পেয়েছি। বর্তমানে আমি পবিত্রঝাড় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে কর্মরত আছি।
এ বিষয়ে পীরগাছা উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. আবুল হোসেন বলেন, প্রধান শিক্ষিকা মোছা. রেহেনা বেগম জাতীয় শ্রেষ্ঠ প্রধান শিক্ষিকার পদক পাওয়ায় আমি তাকে অভিনন্দন জানাই। আমরা উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা পরিবার তার অসামান্য অর্জনে অত্যন্ত আনন্দিত।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. নাজমুল হক সুমন বলেন, মোছা. রেহেনা বেগম জাতীয় শ্রেষ্ঠ প্রধান শিক্ষিকার পদক পাওয়ার বিষয়টি নিঃসন্দেহে অত্যন্ত গর্বের। তিনি পীরগাছাবাসীর মুখ উজ্জ্বল করেছেন। তার পদাঙ্ক অনুসরণ করে পীরগাছার সকল শিক্ষকবৃন্দ আরও ভালো শিক্ষক হিসেবে নিজেদেরকে আবির্ভূত করবেন সেই প্রত্যাশা করছি।

নিউজবিজয়২৪/এফএইচএন

👉 নিউজবিজয় ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন ✅

আপনার সোস্যাল মিডিয়ায় শেয়ার দিন।

NewsBijoy24.Com

নিউজবিজয়২৪.কম একটি অনলাইন নিউজ পোর্টাল। বস্তুনিষ্ঠ ও তথ্যভিত্তিক সংবাদ প্রকাশের প্রতিশ্রুতি নিয়ে ২০১৫ সালের ডিসেম্বর মাসে এটি প্রতিষ্ঠিত হয়। উৎসর্গ করলাম আমার বাবার নামে, যাঁর স্নেহ-সান্নিধ্যের পরশ পরিবারের সুখ-দু:খ,হাসি-কান্না,ব্যথা-বেদনার মাঝেও আপার শান্তিতে পরিবার তথা সমাজে মাথা উচুঁ করে নিজের অস্তিত্বকে মেলে ধরতে পেরেছি।

সুনামগঞ্জে ফের বন্যা, বাড়ছে সুরমা কুশিয়ারাসহ সবকটি নদী-নদীর পানি

কখনো ভাবিনি দেশ সেরা হবো! জাতীয় পর্যায়ে শ্রেষ্ঠ প্রধান শিক্ষিকা পদক পেলেন পীরগাছার রেহেনা

প্রকাশিত সময় :- ০৬:১৫:৩৯ অপরাহ্ন, রবিবার, ৩০ জুন ২০২৪

প্রাথমিক শিক্ষাকে বাদ দিয়ে স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ে তোলা সম্ভব নয়, আমরা যদি প্রাথমিক স্থর টা মজবুত ও টেকসই হিসেবে গড়ে তুলতে পারি, তাহলে সুন্দর দেশ ও জাতী গঠনে প্রাথমিক শিক্ষা আরো একধাপ এগিয়ে যাবে। আমি কখনো ভাবিনি দেশ সেরা হবো, আমার এ পদক প্রাপ্তিতে আমাকে অনুপ্রাণিত করেছে। প্রাথমিক শিক্ষায় নানাবিধ উদ্যোগ গ্রহনের মাধ্যমে প্রাথমিক শিক্ষার মানোন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা পালন করায় আজ আমার এই অর্জন।
এই কথাগুলো বলছিলেন জাতীয় পর্যায়ে শ্রেষ্ঠ প্রধান শিক্ষিকা নির্বাচিত হয়ে প্রধানমন্ত্রীর হাত থেকে পদক গ্রহন করা প্রধান শিক্ষিকা মোছা. রেহেনা বেগম। বৃহস্পতিবার (২৭ জুন) ঢাকার ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে জাতীয় প্রাথমিক শিক্ষা পদক ২০২৩ প্রদান অনুষ্ঠানে তার হাতে পদক তুলে দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। প্রাথমিক শিক্ষা পদক-২০২৩ এর শ্রেষ্ঠ প্রধান শিক্ষক (সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়) ক্যাটাগরিতে নির্বাচিত তিনি।
মোছা. রেহেনা বেগম রংপুরের পীরগাছা উপজেলার পবিত্রঝাড় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা হিসেবে কর্মরত। এর আগে তিনি উপজেলা ও বিভাগীয় পর্যায়ে শ্রেষ্ঠ প্রধান শিক্ষিকা নির্বাচিত হন। তার এ সাফল্যে পীরগাছা উপজেলার শিক্ষক সমাজে প্রশংসিত।
জাতীয় প্রাথমিক শিক্ষা পদক ২০২৩ প্রদান অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব ফরিদ আহাম্মদ। এতে বিশেষ অতিথি হিসেবে ছিলেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী রুমানা আলী টুসি। এ দিন প্রাথমিক শিক্ষার ক্ষেত্রে অসামান্য অবদান, খেলাধুলা, সংগীত, বিদ্যালয় পরিচালনা, প্রাথমিক সমাপনী পরীক্ষায় কৃতিত্ব অর্জনকারী প্রতিষ্ঠান, ব্যক্তি ও শিক্ষার্থী ১২৬ জনের হাতে বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে পদক তুলে দেওয়া হয়।
প্রধান শিক্ষিকা মোছা. রেহেনা বেগম ১৯৮০ সালে রংপুরের পীরগাছা উপজেলার সুখানপুকুর গ্রামের সম্ভ্রান্ত এক মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতা আজাহার আলী পেশায় একজন ব্যবসায়ী। চার ভাইবোনের মধ্যে রেহেনা বেগম সবার ছোট। তিনি ২০০৬ সালে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় হতে উদ্ভিদ বিজ্ঞানে মাস্টার্স সম্পন্ন করেন। ২০০৭ সালে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক হিসেবে চাকুরীতে যোগ দেন। ব্যক্তিগত জীবনে তার স্বামী ও নয় বছরের এক ছেলে সন্তান রয়েছে।
প্রধান শিক্ষিকা মোছা. রেহেনা বেগম বলেন, আমার সফলতার বীজ নগরজিৎপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। একটি পিছিয়ে পড়া বিদ্যালয়টি প্রাথমিক শিক্ষা পদক ২০২২ উপজেলার শ্রেষ্ঠ বিদ্যালয় হিসেবে নির্বাচিত হয় এবং প্রাথমিক বৃত্তি পরীক্ষায় ৬ শিক্ষার্থী অংশগ্রহণ করে ৪ জনই ট্যালেন্টপুল বৃত্তি লাভ করে উপজেলা শ্রেষ্ঠ রেজাল্ট অর্জন করে। আমি শিক্ষার্থীদের লেখা পড়ার পাশাপাশি কো-কারিকুলামের উপর গুরুত্ব আরোপ করি, যা তাদের সার্বিক বিকাশে মাইলস্টোন হিসেবে কাজ করে। আমি স্কুলের বাচ্চাদের নিজের সন্তানের মত মনে করি। স্কুলের বাচ্চাদের ঝরে পড়া রোধ, পড়াশোনায় মনোযোগী করা, সৃজনশীল কর্মকান্ডে উদ্বুদ্ধকরণ, নৈতিক মূল্যবোধের শিক্ষাসহ নানাবিধ কর্মকান্ডে আমি নিজেকে নিবিড়ভাবে সম্পৃক্ত করেছিলাম। যার স্বীকৃতি স্বরুপ আমি জাতীয় পর্যায়ে শ্রেষ্ঠ প্রধান শিক্ষিকার পদক পেয়েছি। বর্তমানে আমি পবিত্রঝাড় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে কর্মরত আছি।
এ বিষয়ে পীরগাছা উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. আবুল হোসেন বলেন, প্রধান শিক্ষিকা মোছা. রেহেনা বেগম জাতীয় শ্রেষ্ঠ প্রধান শিক্ষিকার পদক পাওয়ায় আমি তাকে অভিনন্দন জানাই। আমরা উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা পরিবার তার অসামান্য অর্জনে অত্যন্ত আনন্দিত।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. নাজমুল হক সুমন বলেন, মোছা. রেহেনা বেগম জাতীয় শ্রেষ্ঠ প্রধান শিক্ষিকার পদক পাওয়ার বিষয়টি নিঃসন্দেহে অত্যন্ত গর্বের। তিনি পীরগাছাবাসীর মুখ উজ্জ্বল করেছেন। তার পদাঙ্ক অনুসরণ করে পীরগাছার সকল শিক্ষকবৃন্দ আরও ভালো শিক্ষক হিসেবে নিজেদেরকে আবির্ভূত করবেন সেই প্রত্যাশা করছি।

নিউজবিজয়২৪/এফএইচএন