ঢাকা ০৪:১০ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

কাউনিয়ায় গৃহবঁধুর লাশ উদ্ধার: স্বামী গ্রেফতার

রংপুরের কাউনিয়ায় পাষন্ড স্বামী ও ননদের প্ররোচনায় সুমাইয়া আক্তার (২৪) নামে গৃহবধুঁ আত্মহত্যা করার অভিযোগে স্বামী আসাদুল ইসলামকে প্রেফতার করেছে পুলিশ।
শনিবার রাতে উপজেলার কুর্শা ইউনিয়নের পুর্বচানঘাট গ্রামে স্বামীর বাড়ী থেকে ওই গৃহবধূর লাশ উদ্ধার করে রবিবার ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহ রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠিয়ে পুলিশ।
নিহত সুমাইয়া আক্তার উপজেলার কুর্শা ইউনিয়নের পুর্বচানঘাট গ্রামের আসাদুল ইসলামের স্ত্রী ও একই উপজলার শহীদবাগ ইউনিয়নের ভুতছাড়া মাঝাপাড়া গ্রামের পান ব্যবসায়ী শফিকুল ইসলামের মেয়ে।
এ ঘটনায় রবিবার দুপুরে নিহতের বড় ভাই নুরন্নবী বাদী হয়ে আসাদুল সহ তার দুই বোনের নাম উল্লেখ্য করে কাউনিয়া থানায় একটি মামলা দায়ের করেছে।
আসাদুল ইসলামকে মামলায় গ্রেফতার দেখিয়ে রবিবার বিকেলে রংপুর আদালতে সোপর্দ করার বিষয়টি নিশ্চিত করেন কাউনিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাসুমুর রহমান। তিনি বলেন, গ্রেফতার আসাদুল ইসলাম উপজেলার কুর্শা ইউনিয়নের পুর্বচানঘাট গ্রামের ওমর আলীর ছেলে।
নিহতের বড় ভাই নুরন্নবী জানায়, প্রায ৭ বছর পুর্বে পারিবারিরভাবে তার বোন সুমাইয়া আক্তারের সঙ্গে আসাদুল ইসলামের বিয়ে হয়। তাদের চার বছরের একটি ছেলে রয়েছে। শনিবার বিকেলে প্রতিবেশীর মাধ্যমে জানতে পারেন তার বোন সুমাইয়া আক্তার গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করছে। আমার বোন আত্মহত্যা করতে পারে না। তাকে আত্মহত্যা করতে বাধ্য করেছে বোনের স্বামী ও তার দুই ননদ এবং পরিবারের লোকজন।
নুরন্নবী বলেন, বিয়ের পর থেকে আমার বোনকে স্বামীর বাড়ীতে তার দুইজন ননদ প্রায়ই বিভিন্ন কারণে অকারণে মানষিক ও শারীরিক ভাবে নির্যাতন করতো এবং বলতো তুই এই বাড়িতে কি করিস, এই বাড়ি থেকে যাইতে পারিস না, তুই মরতে পারিস না। আমার বোন দুই ননদের অত্যাচার ও তাকে আত্মহত্যা করতে বলার বিষয় স্বামীকে জানায়। কিন্তু জানার পরও আমার বোনের স্বামী কোন প্রকার কর্ণপাত করতো না। উল্টো সে সহ তার দুই বোন আমার বোনের উপর মানষিক ও শারীরিক ভাবে নির্যাতন বাড়িয়ে দেয় এবং তাকে (আমার বোনকে) বার বার আত্মহত্যা করতে বলে। ঈদের কয়েকদিন আগে তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে স্বামী স্ত্রীর মধ্যে ঝগড়া হলে গত দুইদিন ধরে আমার বোন অনাহারে ছিল।কিন্তু তাকে খাবার পর্যন্ত দেওয়া হয় নাই।
স্থানীয় লোকজন জানায়, আসাদুল বাড়ীর পাশে মুদি দোকান করে। রোজিনা নামে তার একবোনের স্বামী বিদেশে থাকে। সে স্বামীর বাড়ীতে না থেকে পিতার বাড়ীতে বসবাস করছে। আরেক বোন রুমি সেও প্রায় পিতার বাড়ীতে আসতো। বিভিন্ন সময় ভাবী ও দুই ননদদের মধ্যে ঝগড়া শুনা যেত।দুই ননদ প্রায় নাকি সুমাইয়া আক্তারকে নির্যাতন করতো।পাশাপশি আসাদুলও তার স্ত্রীকে নির্যাতন করতো। সুমাইয়া আক্তার স্বামীকে না জানিয়ে প্রতিবেশী একজনকে টাকা ধার দেয়। এনিয়ে শনিবার স্বামী ও ননদরা সুমাইয়াকে বকাবকি করে।
নিহত সুমাইয়া আক্তারের মা নুর বানু জানায়, তার মেয়েকে জামাই ও তার পরিবারের লোকজন প্রায় তাকে নির্যাতন করতো। কোন কিছুর কারণে একটু ঝগড়া হলে মেয়েটাকে ঠিক ভাবে খাবার দিতো না। মেয়েটাকে শনিবার বিনা কারণে পাষন্ড জামাই ও তার দুই বোন মানষিক ও শারীরিক করেছে। তাদের নির্যাতন সহ্য করতে না পেরে আমার মেয়েটা মারা গেছে।
নিহত সুমাইয়া আক্তারের পিতা শফিকুল ইসলাম বলেন, আসাদুল ও তার পরিবারের লোকজন মৃতের ঘটনাকে ভিন্নখাতে প্রবাহিত করতে আত্মহত্যা বলে প্রচারণা চালায়।তার মেয়ে আত্মহত্যা করেনি তাকে আত্মহত্যা করতে বাধ্য করেছে আসাদুল ও তার পরিবারের লোকজন।
কাউনিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি মাসুমর রহমান জানান, খবর পেয়ে রাতেই পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়। ওই গৃহবধূর মুত্য নিয়ে সন্দেহ হওয়ায় স্বামীর বাড়ীর আঙ্গিনা থেকে ওই গৃহবধূর মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। এসময় জিজ্ঞাবাদের জন্য ওই গৃহবঁধুর স্বামী আসাদুলকে থানা নিয়ে আসা হয়।
ওসি মাসুমর রহমান বলেন, ওই গৃহবধূর স্বামী ও তার পরিবারের লোকজন পুলিশকে জানায় সুমাইয়া আক্তার গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন। তবে নিহতের পিতার পরিবারের লোকজনের অভিযোগ সুমাইয়াকে নির্যাতন করে তাকে আত্মহত্যা করতে বাধ্য করেছে আসাদুল ও তার পরিবারের লোকজন। গতকাল সোমবার সকালে ওই গৃহবধূর মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য রংপুর মেডিকেলের মর্গে পাঠানো হয়েছে। ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন পাওয়ার পর মুত্যুর প্রকৃত রহস্য জানা যাবে।

👉 নিউজবিজয় ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন ✅

আপনার সোস্যাল মিডিয়ায় শেয়ার দিন।

NewsBijoy24.Com

নিউজবিজয়২৪.কম একটি অনলাইন নিউজ পোর্টাল। বস্তুনিষ্ঠ ও তথ্যভিত্তিক সংবাদ প্রকাশের প্রতিশ্রুতি নিয়ে ২০১৫ সালের ডিসেম্বর মাসে এটি প্রতিষ্ঠিত হয়। উৎসর্গ করলাম আমার বাবার নামে, যাঁর স্নেহ-সান্নিধ্যের পরশ পরিবারের সুখ-দু:খ,হাসি-কান্না,ব্যথা-বেদনার মাঝেও আপার শান্তিতে পরিবার তথা সমাজে মাথা উচুঁ করে নিজের অস্তিত্বকে মেলে ধরতে পেরেছি।

নামাজের সময়সূচি: ২৭ এপ্রিল ২০২৪

কাউনিয়ায় গৃহবঁধুর লাশ উদ্ধার: স্বামী গ্রেফতার

প্রকাশিত সময় :- ০৬:৩১:২৬ অপরাহ্ন, রবিবার, ৮ মে ২০২২

রংপুরের কাউনিয়ায় পাষন্ড স্বামী ও ননদের প্ররোচনায় সুমাইয়া আক্তার (২৪) নামে গৃহবধুঁ আত্মহত্যা করার অভিযোগে স্বামী আসাদুল ইসলামকে প্রেফতার করেছে পুলিশ।
শনিবার রাতে উপজেলার কুর্শা ইউনিয়নের পুর্বচানঘাট গ্রামে স্বামীর বাড়ী থেকে ওই গৃহবধূর লাশ উদ্ধার করে রবিবার ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহ রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠিয়ে পুলিশ।
নিহত সুমাইয়া আক্তার উপজেলার কুর্শা ইউনিয়নের পুর্বচানঘাট গ্রামের আসাদুল ইসলামের স্ত্রী ও একই উপজলার শহীদবাগ ইউনিয়নের ভুতছাড়া মাঝাপাড়া গ্রামের পান ব্যবসায়ী শফিকুল ইসলামের মেয়ে।
এ ঘটনায় রবিবার দুপুরে নিহতের বড় ভাই নুরন্নবী বাদী হয়ে আসাদুল সহ তার দুই বোনের নাম উল্লেখ্য করে কাউনিয়া থানায় একটি মামলা দায়ের করেছে।
আসাদুল ইসলামকে মামলায় গ্রেফতার দেখিয়ে রবিবার বিকেলে রংপুর আদালতে সোপর্দ করার বিষয়টি নিশ্চিত করেন কাউনিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাসুমুর রহমান। তিনি বলেন, গ্রেফতার আসাদুল ইসলাম উপজেলার কুর্শা ইউনিয়নের পুর্বচানঘাট গ্রামের ওমর আলীর ছেলে।
নিহতের বড় ভাই নুরন্নবী জানায়, প্রায ৭ বছর পুর্বে পারিবারিরভাবে তার বোন সুমাইয়া আক্তারের সঙ্গে আসাদুল ইসলামের বিয়ে হয়। তাদের চার বছরের একটি ছেলে রয়েছে। শনিবার বিকেলে প্রতিবেশীর মাধ্যমে জানতে পারেন তার বোন সুমাইয়া আক্তার গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করছে। আমার বোন আত্মহত্যা করতে পারে না। তাকে আত্মহত্যা করতে বাধ্য করেছে বোনের স্বামী ও তার দুই ননদ এবং পরিবারের লোকজন।
নুরন্নবী বলেন, বিয়ের পর থেকে আমার বোনকে স্বামীর বাড়ীতে তার দুইজন ননদ প্রায়ই বিভিন্ন কারণে অকারণে মানষিক ও শারীরিক ভাবে নির্যাতন করতো এবং বলতো তুই এই বাড়িতে কি করিস, এই বাড়ি থেকে যাইতে পারিস না, তুই মরতে পারিস না। আমার বোন দুই ননদের অত্যাচার ও তাকে আত্মহত্যা করতে বলার বিষয় স্বামীকে জানায়। কিন্তু জানার পরও আমার বোনের স্বামী কোন প্রকার কর্ণপাত করতো না। উল্টো সে সহ তার দুই বোন আমার বোনের উপর মানষিক ও শারীরিক ভাবে নির্যাতন বাড়িয়ে দেয় এবং তাকে (আমার বোনকে) বার বার আত্মহত্যা করতে বলে। ঈদের কয়েকদিন আগে তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে স্বামী স্ত্রীর মধ্যে ঝগড়া হলে গত দুইদিন ধরে আমার বোন অনাহারে ছিল।কিন্তু তাকে খাবার পর্যন্ত দেওয়া হয় নাই।
স্থানীয় লোকজন জানায়, আসাদুল বাড়ীর পাশে মুদি দোকান করে। রোজিনা নামে তার একবোনের স্বামী বিদেশে থাকে। সে স্বামীর বাড়ীতে না থেকে পিতার বাড়ীতে বসবাস করছে। আরেক বোন রুমি সেও প্রায় পিতার বাড়ীতে আসতো। বিভিন্ন সময় ভাবী ও দুই ননদদের মধ্যে ঝগড়া শুনা যেত।দুই ননদ প্রায় নাকি সুমাইয়া আক্তারকে নির্যাতন করতো।পাশাপশি আসাদুলও তার স্ত্রীকে নির্যাতন করতো। সুমাইয়া আক্তার স্বামীকে না জানিয়ে প্রতিবেশী একজনকে টাকা ধার দেয়। এনিয়ে শনিবার স্বামী ও ননদরা সুমাইয়াকে বকাবকি করে।
নিহত সুমাইয়া আক্তারের মা নুর বানু জানায়, তার মেয়েকে জামাই ও তার পরিবারের লোকজন প্রায় তাকে নির্যাতন করতো। কোন কিছুর কারণে একটু ঝগড়া হলে মেয়েটাকে ঠিক ভাবে খাবার দিতো না। মেয়েটাকে শনিবার বিনা কারণে পাষন্ড জামাই ও তার দুই বোন মানষিক ও শারীরিক করেছে। তাদের নির্যাতন সহ্য করতে না পেরে আমার মেয়েটা মারা গেছে।
নিহত সুমাইয়া আক্তারের পিতা শফিকুল ইসলাম বলেন, আসাদুল ও তার পরিবারের লোকজন মৃতের ঘটনাকে ভিন্নখাতে প্রবাহিত করতে আত্মহত্যা বলে প্রচারণা চালায়।তার মেয়ে আত্মহত্যা করেনি তাকে আত্মহত্যা করতে বাধ্য করেছে আসাদুল ও তার পরিবারের লোকজন।
কাউনিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি মাসুমর রহমান জানান, খবর পেয়ে রাতেই পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়। ওই গৃহবধূর মুত্য নিয়ে সন্দেহ হওয়ায় স্বামীর বাড়ীর আঙ্গিনা থেকে ওই গৃহবধূর মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। এসময় জিজ্ঞাবাদের জন্য ওই গৃহবঁধুর স্বামী আসাদুলকে থানা নিয়ে আসা হয়।
ওসি মাসুমর রহমান বলেন, ওই গৃহবধূর স্বামী ও তার পরিবারের লোকজন পুলিশকে জানায় সুমাইয়া আক্তার গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন। তবে নিহতের পিতার পরিবারের লোকজনের অভিযোগ সুমাইয়াকে নির্যাতন করে তাকে আত্মহত্যা করতে বাধ্য করেছে আসাদুল ও তার পরিবারের লোকজন। গতকাল সোমবার সকালে ওই গৃহবধূর মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য রংপুর মেডিকেলের মর্গে পাঠানো হয়েছে। ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন পাওয়ার পর মুত্যুর প্রকৃত রহস্য জানা যাবে।