যশোরের কেশবপুর উপজেলার মঙ্গলকোট বুড়িভদ্রা নদীর তীরে ৭১’ এর বধ্যভূমিতে নির্মিত‘যুদ্ধজয়’ স্মৃতিস্তম্ভ রক্ষার কাজ শুরু হয়েছে। উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ওই উদ্যোগ গ্রহণ করায় মুক্তিযোদ্ধারা খুশি প্রকাশ করেছেন। ৭১’ এ রাজাকারদের সহযোগিতায় পাক সেনারা মঙ্গলকোট ব্রীজের উপর স্বাধীনতাকামী নিরীহ মানুষদের ধরে এনে গুলি করে নদীর ¯্রােতে লাশ ফেলে দেওয়া হতো। ওই বধ্যভূমিটিতে মুক্তিযুদ্ধের গণহত্যা স্মৃতি স্বরূপ ‘যুদ্ধজয়’ নামে একটি স্তম্ভ তৈরি করা হয়। স্তম্ভটি বুড়িভদ্রা নদীর ভাঙ্গনে ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়ে। স্তম্ভটি রক্ষার জন্য নদী পাড়ে পাইলিংয়ের মাধ্যমে সংরক্ষণের জন্য সংস্কার কাজ শুরু করা হয়েছে। ১৯৭১ সালে স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় রাজাকার ও তাদের সহযোগিতায় পাক সেনারা বিভিন্ন স্থান থেকে পালিয়ে ভারতে যাবার সময় স্বাধীনতাকামী নিরীহ মানুষদের ধরে এনে শহরের বালিকা বিদ্যালয়ে রাজাকার ক্যাম্পে রাখা হতো। রাতে মঙ্গলকোট ব্রীজে নিয়ে তাদেরকে গুলি করে লাশ নদীতে ফেলে দিতো। যুদ্ধজয় স্মৃতিস্তম্ভটি নদীর ভাঙ্গণের কারণে ঝুকিপূর্ণ হয়ে পড়ায় উপজেলা নির্বাহী অফিসার এম এম আরাফাত হোসেন স্তম্ভটি সংরক্ষণের উদ্যোগ নেন। ২০১৩-১৪ অর্থ বছরে তৎকালীন উপজেলা নির্বাহী অফিসার আবু সায়েদ মো. মনজুর আলম তিনি নিহতদের স্মৃতির উদ্দেশ্যে এ ‘যুদ্ধজয় স্মৃতি স্তম্ভটি’ নির্মাণ করেন। স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা মোহাম্মদ আলী সাংবাদিকদের বলেন, ৭১’ সালে রাজাকার ও পাক সেনারা উপজেলার বিভিন্ন জায়গা থেকে স্বাধীনতাকামী মানুষদের ধরে এনে ওই স্থানে গুলি করে নদীতে ফেলে দিতো। নিহত স্বাধীনতাকামী ওই সমস্ত মানুষদের স্মৃতি রক্ষায় নদী পারে যুদ্ধজয় নামে স্তম্ভটি তৈরি করা হয়। সম্প্রতি নদী ভাঙ্গনের কারণে স্তম্ভটি ঝুকিপূর্ণ হয়ে পড়ে। উপজেলা নির্বাহী অফিসারের উদ্যোগে স্তম্ভটি রক্ষার কাজ শুরু করায় মুক্তিযোদ্ধাসহ তাদের পরিবারের সদস্যরাও খুশি হয়েছেন। উপজেলা নির্বাহী অফিসার এম এম আরাফাত হোসেন বলেন, মঙ্গলকোট ব্রীজের পাশে বুড়িভদ্রা নদী পারের বধ্যভূমিতে নির্মিত ‘যুদ্ধজয়’ স্মৃতি স্তম্ভটি নদী ভাঙ্গানের কারণে ঝুকিপূর্ণ হয়ে উঠে। স্তম্ভটি রক্ষা করা জন্য পাইলিংয়ের মাধ্যমে কাজ শুরু করা হয়েছে।