ঢাকা ০১:৪৩ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ধুমধামভাবে এতিম মেয়ের বিয়ে, ৬৩ তম এতিম মেয়ের এক অভিভাবক রুবেল

  • নাটোর প্রতিনিধি :-
  • প্রকাশিত সময় :- ১০:৪৫:০৩ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৬ মার্চ ২০২৩
  • ৪১১ পড়া হয়েছে। নিউজবিজয় ২৪.কম-১৫ ডিসেম্বরে ৯ বছরে পর্দাপন

‘বাবাকে হারিয়েছি অনেকদিন আগে। মা থাকেন বাবার রেখে যাওয়া শেষ সম্বল ছুপরি ঘরে। দীর্ঘদিন খালার বাসায় বসবাস করছিলেন। কখনো ভাবিনি এত ধুমধামে আমার মতো এতিম মেয়ের বিয়ে হবে। আজ বুঝলাম, যার কেউ নেই-তার আল্লাহ আছেন। বৃহস্পতিবার নাটোরের লালপুর উপজেলার কদমচিলান ইউনিয়নের পালোহারা গ্রামে বিয়ের আসরে নিজের বিয়ের কথাই বলছিলেন কনে এতিম মেয়ে রিমা খাতুন। ধুমধামভাবে দুইদিনব্যাপী রিমা খাতুনের বিবাহের মধ্য দিয়ে এ ৬৫জন গরীব অসহায় এতিম মেয়েকে বিয়ে দিয়ে তাদের এক অভিভাবক হলেন ব্যবসায়ী রুহুল আমীন রুবেল।
একটি বিয়েতে আলোকসজ্জা, গেট, কনে ও বরের স্টেজ, কনে সাজানোর জন্য বিউটিশিয়ান, ক্যামেরা কোন কিছুরই যেন কমতি ছিলো না লালপুর উপজেলার কদমচিলান ইউনিয়নের পালোহারা গ্রামের এতিম মেয়ের বিয়ের অনুষ্ঠানে। সাজসজ্জার পাশাপাশি বরযাত্রীসহ আমন্ত্রিত প্রায় ২০০শ অতিথির মধ্যে উন্নতমানের খাবারের পাশাপাশি চাইনিজ খাবারও পরিবেশন করা হয় অনুষ্ঠানে। সব আনুষ্ঠানিকতা শেষে এতিম মেয়ে রিমাকে তুলে দেওয়া হয় তার নতুন ঠিকানা পাশ^বর্তী পুকুর পাড়া গ্রামের রহমান আলীর ছেলে মোঃ পলাশ আলী স্বামীর হাতে। পলাশ রুপপুর ইপিজেডে কর্মরত।

স্থানীয়রা জানান, বাবা মারা যাওয়ার পর দীর্ঘদিন যাবৎ খালার বাড়িতে আশ্রয়ে ছিলো মেয়েটি। অর্থের অভাবে মেয়ের বিয়ে নিয়ে দুঃশ্চিন্তায় ছিলো ওর মা রেহেনা বেগম। মাঝে মাঝে বোনের বাসায় রেখে যাওয়া মেয়েকে দেখতে আসতেন তিনি। মেয়েকে দেখার পরপরই শুরু হতো কান্না। বেশকিছুদিন আগে স্থানীয়রা বড়াইগ্রাম উপজেলার চন্ডিপুর গ্রামের ব্যবসায়ী মানবিক ব্যক্তিত্ব মোঃ রুহুল আমীন রুবেলের সন্ধান দিলে তার সাথে যোগাযোগ করে রিমার মা। পরবর্তীতে রুহুল আমীন রুবেল ১৫ই মার্চ হলুদ সন্ধা ও ১৬ই মার্চ বিয়ের দিন তারিখ ঠিক করতে বলেন তার মাকে। বিয়ের যাবতীয় খরচ তিনি বহন করবেন বলে কথা দেন মেয়ের মায়ের কাছে । মা রেহেনা বেগম খুশি হয়ে বিয়ের দিন তারিখ ঠিক করেন।

সে অনুযায়ীই বৃস্পতিবার দুপুরে বিয়ে হয় তাদের। কনের মা রেহেনা বেগম আবেগ আপ্লুত হয়ে বলেন, কখনও ভাবেননি তার মেয়ের এত বড় আয়োজনে বিয়ে হবে। ব্যবসায়ী রুহুল আমীনের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন তিনি।

ব্যবসায়ী রুহুল আমীন রুবেল বলেন, ‘মহান আল্লাহ পাকের অশেষ কৃপায় আমি এ পর্যন্ত ৬৫টি মেয়ের বিবাহ সম্পন্ন করতে পেরেছি। ২০০৫ সাল থেকে আমার এই যাত্রা শুরু। গরীব, অসহায়, এতিম মেয়েদের বিবাহের পাশাপাশি সপ্তাহের প্রতি শুক্রবার আমার নিজ এলাকার দুস্থ্য মানুষদের মাঝে খাবার বিতরণ করে আসছি বিগত ১৭ বছর যাবৎ। এছাড়াও প্রাকৃতিক দুর্যোগ, ঈদ, বিশেষ দিনসহ বিভিন্ন সময় মানুষদের পাশে দাড়িয়ে সহযোগিতা করি। তিনি আরো বলেন, সমাজের সকল বিত্ত্ববানরা তাদের আশপাশের গরীব অসহায় দুস্থ্য মানুষদের পাশে দাড়ালে হাজারো মানুষ ভাল ভাবে খেয়ে বেঁচে থাকতে পারবে। তাই আসুন নিজ নিজ অবস্থান থেকে সকলেই তাদের পাশে দাড়াই।

নিউজবিজয়২৪/এফএইচএন

👉 নিউজবিজয় ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন ✅

আপনার সোস্যাল মিডিয়ায় শেয়ার দিন।

NewsBijoy24.Com

নিউজবিজয়২৪.কম একটি অনলাইন নিউজ পোর্টাল। বস্তুনিষ্ঠ ও তথ্যভিত্তিক সংবাদ প্রকাশের প্রতিশ্রুতি নিয়ে ২০১৫ সালের ডিসেম্বর মাসে এটি প্রতিষ্ঠিত হয়। উৎসর্গ করলাম আমার বাবার নামে, যাঁর স্নেহ-সান্নিধ্যের পরশ পরিবারের সুখ-দু:খ,হাসি-কান্না,ব্যথা-বেদনার মাঝেও আপার শান্তিতে পরিবার তথা সমাজে মাথা উচুঁ করে নিজের অস্তিত্বকে মেলে ধরতে পেরেছি।

গ্যাটকো দুর্নীতি মামলায় অভিযোগ গঠন শুনানি পেছাল

ধুমধামভাবে এতিম মেয়ের বিয়ে, ৬৩ তম এতিম মেয়ের এক অভিভাবক রুবেল

প্রকাশিত সময় :- ১০:৪৫:০৩ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৬ মার্চ ২০২৩

‘বাবাকে হারিয়েছি অনেকদিন আগে। মা থাকেন বাবার রেখে যাওয়া শেষ সম্বল ছুপরি ঘরে। দীর্ঘদিন খালার বাসায় বসবাস করছিলেন। কখনো ভাবিনি এত ধুমধামে আমার মতো এতিম মেয়ের বিয়ে হবে। আজ বুঝলাম, যার কেউ নেই-তার আল্লাহ আছেন। বৃহস্পতিবার নাটোরের লালপুর উপজেলার কদমচিলান ইউনিয়নের পালোহারা গ্রামে বিয়ের আসরে নিজের বিয়ের কথাই বলছিলেন কনে এতিম মেয়ে রিমা খাতুন। ধুমধামভাবে দুইদিনব্যাপী রিমা খাতুনের বিবাহের মধ্য দিয়ে এ ৬৫জন গরীব অসহায় এতিম মেয়েকে বিয়ে দিয়ে তাদের এক অভিভাবক হলেন ব্যবসায়ী রুহুল আমীন রুবেল।
একটি বিয়েতে আলোকসজ্জা, গেট, কনে ও বরের স্টেজ, কনে সাজানোর জন্য বিউটিশিয়ান, ক্যামেরা কোন কিছুরই যেন কমতি ছিলো না লালপুর উপজেলার কদমচিলান ইউনিয়নের পালোহারা গ্রামের এতিম মেয়ের বিয়ের অনুষ্ঠানে। সাজসজ্জার পাশাপাশি বরযাত্রীসহ আমন্ত্রিত প্রায় ২০০শ অতিথির মধ্যে উন্নতমানের খাবারের পাশাপাশি চাইনিজ খাবারও পরিবেশন করা হয় অনুষ্ঠানে। সব আনুষ্ঠানিকতা শেষে এতিম মেয়ে রিমাকে তুলে দেওয়া হয় তার নতুন ঠিকানা পাশ^বর্তী পুকুর পাড়া গ্রামের রহমান আলীর ছেলে মোঃ পলাশ আলী স্বামীর হাতে। পলাশ রুপপুর ইপিজেডে কর্মরত।

স্থানীয়রা জানান, বাবা মারা যাওয়ার পর দীর্ঘদিন যাবৎ খালার বাড়িতে আশ্রয়ে ছিলো মেয়েটি। অর্থের অভাবে মেয়ের বিয়ে নিয়ে দুঃশ্চিন্তায় ছিলো ওর মা রেহেনা বেগম। মাঝে মাঝে বোনের বাসায় রেখে যাওয়া মেয়েকে দেখতে আসতেন তিনি। মেয়েকে দেখার পরপরই শুরু হতো কান্না। বেশকিছুদিন আগে স্থানীয়রা বড়াইগ্রাম উপজেলার চন্ডিপুর গ্রামের ব্যবসায়ী মানবিক ব্যক্তিত্ব মোঃ রুহুল আমীন রুবেলের সন্ধান দিলে তার সাথে যোগাযোগ করে রিমার মা। পরবর্তীতে রুহুল আমীন রুবেল ১৫ই মার্চ হলুদ সন্ধা ও ১৬ই মার্চ বিয়ের দিন তারিখ ঠিক করতে বলেন তার মাকে। বিয়ের যাবতীয় খরচ তিনি বহন করবেন বলে কথা দেন মেয়ের মায়ের কাছে । মা রেহেনা বেগম খুশি হয়ে বিয়ের দিন তারিখ ঠিক করেন।

সে অনুযায়ীই বৃস্পতিবার দুপুরে বিয়ে হয় তাদের। কনের মা রেহেনা বেগম আবেগ আপ্লুত হয়ে বলেন, কখনও ভাবেননি তার মেয়ের এত বড় আয়োজনে বিয়ে হবে। ব্যবসায়ী রুহুল আমীনের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন তিনি।

ব্যবসায়ী রুহুল আমীন রুবেল বলেন, ‘মহান আল্লাহ পাকের অশেষ কৃপায় আমি এ পর্যন্ত ৬৫টি মেয়ের বিবাহ সম্পন্ন করতে পেরেছি। ২০০৫ সাল থেকে আমার এই যাত্রা শুরু। গরীব, অসহায়, এতিম মেয়েদের বিবাহের পাশাপাশি সপ্তাহের প্রতি শুক্রবার আমার নিজ এলাকার দুস্থ্য মানুষদের মাঝে খাবার বিতরণ করে আসছি বিগত ১৭ বছর যাবৎ। এছাড়াও প্রাকৃতিক দুর্যোগ, ঈদ, বিশেষ দিনসহ বিভিন্ন সময় মানুষদের পাশে দাড়িয়ে সহযোগিতা করি। তিনি আরো বলেন, সমাজের সকল বিত্ত্ববানরা তাদের আশপাশের গরীব অসহায় দুস্থ্য মানুষদের পাশে দাড়ালে হাজারো মানুষ ভাল ভাবে খেয়ে বেঁচে থাকতে পারবে। তাই আসুন নিজ নিজ অবস্থান থেকে সকলেই তাদের পাশে দাড়াই।

নিউজবিজয়২৪/এফএইচএন