ঢাকা ০৯:০৬ অপরাহ্ন, বুধবার, ০৩ জুলাই ২০২৪, ১৯ আষাঢ় ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

বান্দার প্রতি আল্লাহর দয়া

  • ইসলাম ডেস্ক
  • প্রকাশিত সময় :- ১২:২৯:৫০ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১ জুলাই ২০২৪
  • 23

আল্লাহ রাহমানুর রাহিম; পরম করুণাময়, দয়ার আধার। বান্দার প্রতি আল্লাহর অনুগ্রহ ও ইহসানের কোনো সীমা নেই। দুনিয়াতে মানুষ পাপাচারে লিপ্ত হয়, চরম সীমালঙঘন করে, এরপরও আল্লাহ ছাড় দেন, তওবার জন্য সময় দেন। আল্লাহর দয়া না হলে দুনিয়ার বেশিরভাগ মানুষই অবাধ্যতার অপরাধে ধ্বংস হয়ে যেতো।

বান্দা গুনাহ করলে আল্লাহ অনেক সময় ক্ষমা করে দেন, অনেক সময় দুনিয়া বা আখেরাতের শাস্তির ফয়সালা করেন। গুনাহের শাস্তি হয় গুনাহের সমপরিমাণ। আল্লাহ জুলুম করেন না। আর যদি বান্দা আল্লাহর আনুগত্য করে, নেক কাজ করে, তাহলে আল্লাহ বহুগুণ বেশি সওয়াব দান করেন। আল্লাহ বলেন,

اِنَّ اللّٰهَ لَا یَظۡلِمُ مِثۡقَالَ ذَرَّۃٍ وَ اِنۡ تَکُ حَسَنَۃً یُّضٰعِفۡهَا وَ یُؤۡتِ مِنۡ لَّدُنۡهُ اَجۡرًا عَظِیۡمًا

নিশ্চয় আল্লাহ অণু পরিমাণও জুলুম করেন না। আর যদি সেটি ভাল কাজ হয়, তিনি তাকে দ্বিগুণ করে দেন এবং তাঁর পক্ষ থেকে বিপুল প্রতিদান প্রদান করেন। (সুরা নিসা: ৪০)

এ আয়াতে বিপুল পরিমাণ সওয়াবের কথা বলা হয়েছে, সওয়াবর বৃদ্ধির কোনো পরিমাণ উল্লেখ করা হয়নি। অন্য দুটি আয়াত ও হাদিস থেকে বোঝা যায় মুমিনের নেক কাজের সওয়াব কমপক্ষে দশগুণ বাড়ে, আর আল্লাহর ইচ্ছায় তা সাত শত গুণেরও বেশি বাড়তে পারে। আল্লাহ তাআলা বলেন,

مَنۡ جَآءَ بِالۡحَسَنَۃِ فَلَهٗ عَشۡرُ اَمۡثَالِهَا وَ مَنۡ جَآءَ بِالسَّیِّئَۃِ فَلَا یُجۡزٰۤی اِلَّا مِثۡلَهَا وَ هُمۡ لَا یُظۡلَمُوۡنَ

যে সৎকাজ নিয়ে এসেছে, তার জন্য হবে তার দশ গুণ। আর যে অসৎকাজ নিয়ে এসেছে, তাকে অনুরূপই প্রতিদান দেয়া হবে এবং তাদের ওপর জুলুম করা হবে না। (সুরা আনআম: ১৬০)

আরেক আয়াতে আল্লাহ তাআলা বলেন,

مَثَلُ الَّذِیۡنَ یُنۡفِقُوۡنَ اَمۡوَالَهُمۡ فِیۡ سَبِیۡلِ اللّٰهِ كَمَثَلِ حَبَّۃٍ اَنۡۢبَتَتۡ سَبۡعَ سَنَابِلَ فِیۡ كُلِّ سُنۡۢبُلَۃٍ مِّائَۃُ حَبَّۃٍ وَ اللّٰهُ یُضٰعِفُ لِمَنۡ یَّشَآءُ وَ اللّٰهُ وَاسِعٌ عَلِیۡمٌ

যারা আল্লাহর পথে তাদের সম্পদ ব্যয় করে, তাদের উপমা একটি বীজের মত, যা উৎপন্ন করল সাতটি শীষ, প্রতিটি শীষে রয়েছে একশত দানা। আর আল্লাহ যাকে চান তার জন্য বাড়িয়ে দেন। আর আল্লাহ প্রাচুর্যময়, সর্বজ্ঞ। (সুরা বাকারা: ২৬১)

 

হাদিসে কুদসিতে বর্ণিত রয়েছে আল্লাহ তাআলা বলেন,

 

إنَّ اللَّهَ كَتَبَ الْحَسَنَاتِ وَالسَّيِّئَاتِ، ثُمَّ بَيَّنَ ذَلِكَ، فَمَنْ هَمَّ بِحَسَنَةٍ فَلَمْ يَعْمَلْهَا كَتَبَهَا اللَّهُ عِنْدَهُ حَسَنَةً كَامِلَةً، وَإِنْ هَمَّ بِهَا فَعَمِلَهَا كَتَبَهَا اللَّهُ عِنْدَهُ عَشْرَ حَسَنَاتٍ إلَى سَبْعِمِائَةِ ضِعْفٍ إلَى أَضْعَافٍ كَثِيرَةٍ، وَإِنْ هَمَّ بِسَيِّئَةٍ فَلَمْ يَعْمَلْهَا كَتَبَهَا اللَّهُ عِنْدَهُ حَسَنَةً كَامِلَةً، وَإِنْ هَمَّ بِهَا فَعَمِلَهَا كَتَبَهَا اللَّهُ سَيِّئَةً وَاحِدَةً

 

আল্লাহ ভাল ও মন্দ কাজ লিখে রাখেন। তারপর তিনি ব্যাখ্যা করেন, যে ব্যক্তি ভাল কাজের জন্য দৃঢ় সংকল্প করে কিন্তু তা সম্পন্ন করতে ব্যর্থ হয়, আল্লাহ তার আমলনামায় একটি পূর্ণ নেকি লিখেন আর যদি সে তা সম্পন্ন করে তবে আল্লাহ তার আমলনামায় দশ নেকি থেকে সাতশত পর্যন্ত; বরং তার চেয়েও বেশি নেকি লিখেন। যদি কারো মনে মন্দ কাজের বাসনা জাগে কিন্তু তা সে কাজে পরিণত না করে, আল্লাহ তার জন্য একটি পূর্ণ নেকি লিখেন। যদি সে তার বাসনা কাজে পরিণত করে, তবে তার জন্য একটি মন্দ কাজ লিখেন। (সহিহ বুখারি: ৬৪৯১, সহিহ মুসলিম: ১৩১)

 

অর্থাৎ মুমিনের ভালো বা মন্দ কাজ করা না করা চার রকম হতে পারে। এক. মুমিন যদি কোনো ভালো কাজ করার নিয়ত করে পরে তা না করতে পারে, তাহলে আল্লাহ তার নিয়তের কারণে তার জন্য একটি পূর্ণ নেকি লিখেন। দুই. মুমিন যদি কোনো নেক কাজের নিয়ত করে এবং নেক কাজটি সম্পন্নও করে, তাহলে আল্লাহ তাকে দশ থেকে সাতশত বা আরও বেশি নেকি দান করেন। তিন. মুমিন ব্যক্তি কোনো খারাপ কাজের ইচ্ছা করেও পরে আল্লাহর ভয়ে তা না করলে আল্লাহ ওই খারাপ কাজটি না করার কারণে তাকে একটি পূর্ণ নেকি দান করেন। চার. মুমিন ব্যক্তি কোনো খারাপ কাজ করে ফেললে তার আমলনামায় একটি খারাপ কাজের গুনাহ লেখা হয়, বাড়িয়ে লেখা হয় না।

নিউজবিজয়২৪/এফএইচএন

👉 নিউজবিজয় ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন ✅

আপনার সোস্যাল মিডিয়ায় শেয়ার দিন।

NewsBijoy24.Com

নিউজবিজয়২৪.কম একটি অনলাইন নিউজ পোর্টাল। বস্তুনিষ্ঠ ও তথ্যভিত্তিক সংবাদ প্রকাশের প্রতিশ্রুতি নিয়ে ২০১৫ সালের ডিসেম্বর মাসে এটি প্রতিষ্ঠিত হয়। উৎসর্গ করলাম আমার বাবার নামে, যাঁর স্নেহ-সান্নিধ্যের পরশ পরিবারের সুখ-দু:খ,হাসি-কান্না,ব্যথা-বেদনার মাঝেও আপার শান্তিতে পরিবার তথা সমাজে মাথা উচুঁ করে নিজের অস্তিত্বকে মেলে ধরতে পেরেছি।

সুনামগঞ্জে ফের বন্যা, বাড়ছে সুরমা কুশিয়ারাসহ সবকটি নদী-নদীর পানি

বান্দার প্রতি আল্লাহর দয়া

প্রকাশিত সময় :- ১২:২৯:৫০ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১ জুলাই ২০২৪

আল্লাহ রাহমানুর রাহিম; পরম করুণাময়, দয়ার আধার। বান্দার প্রতি আল্লাহর অনুগ্রহ ও ইহসানের কোনো সীমা নেই। দুনিয়াতে মানুষ পাপাচারে লিপ্ত হয়, চরম সীমালঙঘন করে, এরপরও আল্লাহ ছাড় দেন, তওবার জন্য সময় দেন। আল্লাহর দয়া না হলে দুনিয়ার বেশিরভাগ মানুষই অবাধ্যতার অপরাধে ধ্বংস হয়ে যেতো।

বান্দা গুনাহ করলে আল্লাহ অনেক সময় ক্ষমা করে দেন, অনেক সময় দুনিয়া বা আখেরাতের শাস্তির ফয়সালা করেন। গুনাহের শাস্তি হয় গুনাহের সমপরিমাণ। আল্লাহ জুলুম করেন না। আর যদি বান্দা আল্লাহর আনুগত্য করে, নেক কাজ করে, তাহলে আল্লাহ বহুগুণ বেশি সওয়াব দান করেন। আল্লাহ বলেন,

اِنَّ اللّٰهَ لَا یَظۡلِمُ مِثۡقَالَ ذَرَّۃٍ وَ اِنۡ تَکُ حَسَنَۃً یُّضٰعِفۡهَا وَ یُؤۡتِ مِنۡ لَّدُنۡهُ اَجۡرًا عَظِیۡمًا

নিশ্চয় আল্লাহ অণু পরিমাণও জুলুম করেন না। আর যদি সেটি ভাল কাজ হয়, তিনি তাকে দ্বিগুণ করে দেন এবং তাঁর পক্ষ থেকে বিপুল প্রতিদান প্রদান করেন। (সুরা নিসা: ৪০)

এ আয়াতে বিপুল পরিমাণ সওয়াবের কথা বলা হয়েছে, সওয়াবর বৃদ্ধির কোনো পরিমাণ উল্লেখ করা হয়নি। অন্য দুটি আয়াত ও হাদিস থেকে বোঝা যায় মুমিনের নেক কাজের সওয়াব কমপক্ষে দশগুণ বাড়ে, আর আল্লাহর ইচ্ছায় তা সাত শত গুণেরও বেশি বাড়তে পারে। আল্লাহ তাআলা বলেন,

مَنۡ جَآءَ بِالۡحَسَنَۃِ فَلَهٗ عَشۡرُ اَمۡثَالِهَا وَ مَنۡ جَآءَ بِالسَّیِّئَۃِ فَلَا یُجۡزٰۤی اِلَّا مِثۡلَهَا وَ هُمۡ لَا یُظۡلَمُوۡنَ

যে সৎকাজ নিয়ে এসেছে, তার জন্য হবে তার দশ গুণ। আর যে অসৎকাজ নিয়ে এসেছে, তাকে অনুরূপই প্রতিদান দেয়া হবে এবং তাদের ওপর জুলুম করা হবে না। (সুরা আনআম: ১৬০)

আরেক আয়াতে আল্লাহ তাআলা বলেন,

مَثَلُ الَّذِیۡنَ یُنۡفِقُوۡنَ اَمۡوَالَهُمۡ فِیۡ سَبِیۡلِ اللّٰهِ كَمَثَلِ حَبَّۃٍ اَنۡۢبَتَتۡ سَبۡعَ سَنَابِلَ فِیۡ كُلِّ سُنۡۢبُلَۃٍ مِّائَۃُ حَبَّۃٍ وَ اللّٰهُ یُضٰعِفُ لِمَنۡ یَّشَآءُ وَ اللّٰهُ وَاسِعٌ عَلِیۡمٌ

যারা আল্লাহর পথে তাদের সম্পদ ব্যয় করে, তাদের উপমা একটি বীজের মত, যা উৎপন্ন করল সাতটি শীষ, প্রতিটি শীষে রয়েছে একশত দানা। আর আল্লাহ যাকে চান তার জন্য বাড়িয়ে দেন। আর আল্লাহ প্রাচুর্যময়, সর্বজ্ঞ। (সুরা বাকারা: ২৬১)

 

হাদিসে কুদসিতে বর্ণিত রয়েছে আল্লাহ তাআলা বলেন,

 

إنَّ اللَّهَ كَتَبَ الْحَسَنَاتِ وَالسَّيِّئَاتِ، ثُمَّ بَيَّنَ ذَلِكَ، فَمَنْ هَمَّ بِحَسَنَةٍ فَلَمْ يَعْمَلْهَا كَتَبَهَا اللَّهُ عِنْدَهُ حَسَنَةً كَامِلَةً، وَإِنْ هَمَّ بِهَا فَعَمِلَهَا كَتَبَهَا اللَّهُ عِنْدَهُ عَشْرَ حَسَنَاتٍ إلَى سَبْعِمِائَةِ ضِعْفٍ إلَى أَضْعَافٍ كَثِيرَةٍ، وَإِنْ هَمَّ بِسَيِّئَةٍ فَلَمْ يَعْمَلْهَا كَتَبَهَا اللَّهُ عِنْدَهُ حَسَنَةً كَامِلَةً، وَإِنْ هَمَّ بِهَا فَعَمِلَهَا كَتَبَهَا اللَّهُ سَيِّئَةً وَاحِدَةً

 

আল্লাহ ভাল ও মন্দ কাজ লিখে রাখেন। তারপর তিনি ব্যাখ্যা করেন, যে ব্যক্তি ভাল কাজের জন্য দৃঢ় সংকল্প করে কিন্তু তা সম্পন্ন করতে ব্যর্থ হয়, আল্লাহ তার আমলনামায় একটি পূর্ণ নেকি লিখেন আর যদি সে তা সম্পন্ন করে তবে আল্লাহ তার আমলনামায় দশ নেকি থেকে সাতশত পর্যন্ত; বরং তার চেয়েও বেশি নেকি লিখেন। যদি কারো মনে মন্দ কাজের বাসনা জাগে কিন্তু তা সে কাজে পরিণত না করে, আল্লাহ তার জন্য একটি পূর্ণ নেকি লিখেন। যদি সে তার বাসনা কাজে পরিণত করে, তবে তার জন্য একটি মন্দ কাজ লিখেন। (সহিহ বুখারি: ৬৪৯১, সহিহ মুসলিম: ১৩১)

 

অর্থাৎ মুমিনের ভালো বা মন্দ কাজ করা না করা চার রকম হতে পারে। এক. মুমিন যদি কোনো ভালো কাজ করার নিয়ত করে পরে তা না করতে পারে, তাহলে আল্লাহ তার নিয়তের কারণে তার জন্য একটি পূর্ণ নেকি লিখেন। দুই. মুমিন যদি কোনো নেক কাজের নিয়ত করে এবং নেক কাজটি সম্পন্নও করে, তাহলে আল্লাহ তাকে দশ থেকে সাতশত বা আরও বেশি নেকি দান করেন। তিন. মুমিন ব্যক্তি কোনো খারাপ কাজের ইচ্ছা করেও পরে আল্লাহর ভয়ে তা না করলে আল্লাহ ওই খারাপ কাজটি না করার কারণে তাকে একটি পূর্ণ নেকি দান করেন। চার. মুমিন ব্যক্তি কোনো খারাপ কাজ করে ফেললে তার আমলনামায় একটি খারাপ কাজের গুনাহ লেখা হয়, বাড়িয়ে লেখা হয় না।

নিউজবিজয়২৪/এফএইচএন