রংপুরের পীরগাছায় রান্নার কাজে সহযোগিতায়র কথা বলে খাবারে চেতনা নাশক মিশিয়ে মোটর সাইকেল, নগদ টাকা ও স্বর্ণালংকারসহ ৫ লক্ষাধিক টাকা লুটের ঘটনায় ৬ জনকে গ্রেফতার করেছে পীরগাছা থানা পুলিশ। গাইবান্ধার সাদুল্যাপুর, রংপুরের পীরগঞ্জ ও পীরগাছা উপজেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে তাদের গ্রেফতার করা হয়। এসময় তাদের নিকট থেকে কিছু স্বর্ণ ও রুপার অংলকার উদ্ধার করা হলেও মোটর সাইকেলটি পাওয়া যায়নি। শুক্রবার দুপুরে এ তথ্য জানান পীরগাছা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাসুমুর রহমান।
জানা গেছে, গত ৩ অক্টোবর রাতে উপজেলার ছাওলা ইউনিয়নের গাবুড়া (মাঝিপাড়া) গ্রামের আজগার আলী প্রামানিকের বাড়িতে রান্নার কাজে সহযোগিতার কথা বলে মঞ্জুয়ারা বেগম নামে এক মহিলা খাবারের সাথে চেতনা নাশক ঔষধ মিশিয়ে দেয়। ওই রাতে বাড়ির সবাই অচেতন হয়ে পড়লে তারা অজ্ঞান পাটির আরো কয়েক সদস্য মিলে একটি ডিসকোভার মোটরসাইকেল, নগদ ১ লাখ ৭০ হাজার টাকা ও স্বর্ণালংকারসহ প্রায় সাড়ে ৫ লক্ষাধিক টাকার মালামাল লুট করে নিয়ে যায়। পরদিন পাশের বাড়ির লোকজন বিষয়টি জানতে পেরে অজ্ঞান অবস্থায় আজগার আলী, তার স্ত্রী ফেন্সি বেগম ও দুই সন্তানকে উদ্ধার করে পীরগাছা হাসপাতালে ভর্তি করে। এ ঘটনায় আজগার আলী পীরগাছা থানায় মঞ্জুয়ারা বেগম ও হবিবর নামে দুজনের নাম উল্লেখ করে একটি লিখিত অভিযোগ দেন। পরে পুলিশ তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় চোর দলের অন্যতম সদস্য মঞ্জুয়ারা বেগমকে গাইবান্ধার ধাপেরহাট এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করে। পরে তার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে অভিযান চালিয়ে গাইবান্ধার সাদুল্ল্যাপুর উপজেলার মহারানী পারভিন (৩৫), রংপুরের পীরগঞ্জ উপজেলার সুরুজ মিয়া (২২), পাপন চন্দ্র মহন্ত (২২), রাশিদুল ইসলাম (৩০), মঞ্জুয়ারা বেগম (৩৫) এবং পীরগাছা উপজেলার হবিবর রহমান (৩৮)কে গ্রেফতার করে।
এ সময় তাদের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে ৩টি চোরাই স্বর্ণের আংটি, ২টি স্বর্ণের নাকফুল, ২টি রুপার চেইন, ১টি রুপার ব্রেসলেট, ৬টি রুপার নুপুর, ২টি রুপার পায়ের আংটি, ১ জোড়া রুপার কানের দুল ও নগদ ৭ হাজার ৯৯০ টাকা উদ্ধার করা হয়। পরবর্তীতে তাদের আদালতে পাঠানো হলে মঞ্জুয়ারা বেগম ও পারভিন আদালতে স্বেচ্ছায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন।
এ বিষয়ে রংপুরের সহকারী পুলিশ সুপার (সি সার্কেল) আশরাফুল আলম পলাশ বলেন, পীরগাছা থানা ও রংপুর জেলা গোয়েন্দা শাখার যৌথ দল টানা কয়েক দিন অভিযান চালিয়ে সংঘবদ্ধ চোর দলের মোট ৬ সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে। এই চক্রটি রংপুর ও আশপাশের এলাকায় কৌশলে খাবারের সঙ্গে ওষুধ মিশিয়ে অজ্ঞান করে সর্বস্ব লুট করতেন। এই চক্রের অন্য সদস্যদেরও আইনের আওতায় আনার পুলিশ কাজ করে যাচ্ছে।নিউজবিজয়/এফএইচএন